সিলেটে উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৫ দফা মেনে নিল স্কলার্সহোম স্কুল

সিলেট আই ডেস্ক ::
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪:৩৮ অপরাহ্ণসিলেটের স্কলার্সহোম স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধারের জেরে উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি ও ছয়টি বিষয়ে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে আজ সোমবার শিক্ষার্থীদের দাবি ও সংস্কারের বিষয়গুলো মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি লিখিত আকারে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্কলার্সহোম শাহি ঈদগাহ শাখার অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুনীর আহমেদ কাদেরী জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি ও সংস্কারের প্রস্তাব মেনে নেওয়া হয়েছে। আজমান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে ছিল—উপাধ্যক্ষ আশরাফ হোসেন চৌধুরীর পদত্যাগ, শ্রেণিশিক্ষক শামীম হোসেন ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তাইবার অপসারণ, এ বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থীদের হেনস্তা না করা, সহপাঠীর মৃত্যুর কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত শিক্ষার্থীদের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত না করা এবং আজমানের মৃত্যুর বিষয়ে কলেজের নোটিশ বোর্ডে টানানো বিবৃতির অপসারণ।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের সংস্কার প্রস্তাবগুলো হলো, অভিভাবকের সঙ্গে অসদাচরণ যাতে না হয়, সেটি নিশ্চিত; কলেজ কর্তৃপক্ষের নীতি যেন শিক্ষার্থীবান্ধব হয়, তা নিশ্চিত; পরীক্ষার রুটিন তৈরিতে শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব আরোপ; রুটিনের ক্ষেত্রে ১৩ কার্যদিবসের সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করে ২৬ কার্যদিবসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ; শিক্ষকদের ব্যক্তিগত আক্রোশ বন্ধ ও ক্লাস ক্যাপ্টেন নির্বাচনের ব্যবস্থা।
১৭ সেপ্টেম্বর কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমান আহমেদের (১৯) মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যার প্ররোচনা’র দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। আজ দুপুরে স্কলার্সহোম শাহি ঈদগাহ শাখায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সায়েম হাসনাত বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবি কলেজের উপাধ্যক্ষ আশরাফ হোসেনের পদত্যাগ গতকাল রোববার নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সুন্দর শিক্ষাব্যবস্থার জন্য অন্য দুই শ্রেণিশিক্ষক শামীম হোসেন ও তাইবাকে অপসারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য আরও তিনটি দাবিও মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে ছয়টি সংস্কারের বিষয়গুলোও মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
১৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরের সুবিদবাজার বনকলাপাড়ার নিজ বাসা থেকে আজমানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদ আহমদের ছেলে। আজমান এইচএসসি প্রাক্–নির্বাচনী পরীক্ষায় দুটি বিষয়ে অংশ নিতে পারেননি। ফলাফলে ওই দুটিসহ তাঁকে পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য দেখানো হয়।
আজমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন অনেকে। পরে আন্দোলনে নামেন তাঁর সহপাঠীরা। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর সিলেট মহানগরের বিমানবন্দর থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে পরিবার।