জৈন্তাপুরে ১৯ টি পূজা মন্ডপে শুরু হয়েছে শারদীয় দূর্গা পূজা

সাইফুল ইসলাম বাবু , জৈন্তাপুর:
প্রকাশিত হয়েছে : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৫:৩৮ অপরাহ্ণসিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় রবিবার ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ১৯ টি পূজা মন্ডপে শুরু হয়েছে শারদীয় দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ইতিমধ্যে দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
গতকাল জৈন্তাপুর মডেল থানা হতে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের সমন্বয়ে থানায় ব্রিফিং প্যারেড শেষে প্রতিটি পূজা মন্ডপে ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বছর যে কয়টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হলো, ১ নং নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত শ্রী শ্রী কালিবাড়ী পূজা মন্ডপ,শ্রী শ্রী দূর্গাবাড়ী পূজা মন্ডপ,শ্রী শ্রী রামেশ্বর শিব মন্দির সারিঘাট ও শ্রী শ্রী মহাদেব বাড়ী ঘিলাতৈল পূজা মন্ডপ।
২ নং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত পূজামণ্ডপগুলো হলো,শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির শ্রীপুর চা-বাগান,মোকামবাড়ী সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপ,কেন্দ্রী কেন্দ্রী হাওড় সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপ,গাতিগ্রাম সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপ।
৩ নং চারিকাঠা ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত পূজামণ্ডপ গুলো হচ্ছে সরুখেল পশ্চিম সার্বজনীন বিশ্ব হরি দেবালয় পূজা মন্ডপ,আফিফা নগর চা বাগান পূজা মন্ডপ,থুবাং ভৈরব বাড়ী সার্বজনীন পূজা মন্ডপ।
৪ নং দরবস্ত ইউনিয়নে একমাত্র পূজা মন্ডপ হলো উত্তর মহাইল সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির। এ ছাড়াও ৫ নং ফতেহপুর ইউনিয়নে হেমু সার্বজনীন পূজা মন্ডপ।
৬ নং চিকনাগোল ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্ভুক্ত পূজা মন্ডপ গুলো হলো, শ্রী শ্রী দূর্গা মন্ডপ আহমেদ নগর চা বাগান, হাবিব নগর চা বাগান পূজা মন্ডপ,শ্রী শ্রী শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপন কমিটি উমনপুর, খান চা বাগান পূজা মন্ডপ,শ্রী শ্রী শিব মন্দির পূজা মন্ডপ রামেশ্বর ও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম পূজা মন্ডপ সেনাপতি টিলা।
এদিকে নিজপাট শ্রী শ্রী কালিবাড়ী পূজা মন্ডপের সভাপতি সুব্রত মোহন ধর জানান, রবিবার ষষ্ঠী পূজার দিনে ইতিমধ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শুরু হয়েছে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। তিনি জানান প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করতে সিসি ক্যামেরা স্হাপন করা হয়েছে।
কেন্দ্রী কেন্দ্রী হাওড় সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্ডপের সভাপতি শ্রী পুলিন দেবনাথ জানান, ইতিমধ্যে মন্ডপে প্রতিমা স্হাপন সহ আনুষাঙ্গিক সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ২০/২৫ সদস্যের একটি সেচ্ছাসেবক টিম কাজ করবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
পূজার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা নাজমা বেগম জানান,পুরো উপজেলার পূজা মন্ডপ গুলোতে ১২৮ জন আনসার ও গ্রাম পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে উপজেলা কার্যালয় থেকে সার্বিকভাবে সব মনিটরিং করা হচ্ছে। তাছাড়া যেকোন প্রয়োজনে সুরক্ষা আ্যপস বা হটলাইন নাম্বারে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে।
শারদীয় দূর্গা পূজার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, পুরো উপজেলায় ১৯টি পূজা মন্ডপে সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে পুলিশ। তিনি বলেন তামাবিল মহাসড়কে পাশে যে সমস্ত মন্ডপ রয়েছে সেখানে কোন প্রকার গাড়ী পার্কিং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে দিক নির্দেশনা রয়েছে তা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দদের অবগত করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিটি মন্ডপে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও দিনে ও রাতে পুলিশের বিশেষ টহল ও মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক প্রতিটি মন্ডপ নিয়মিত পরিদর্শন করবে। এ ছাড়াও মন্ডপের আশপাশে অতিরিক্ত লোকসমাগম করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি)র উপ-অধিনায়ক মেজর নুরুল হুদা বলেন জৈন্তাপুর উপজেলায় ৪৮ বিজিবির আওতাধীন সীমান্তের নিকটবর্তী তিনটি পূজা মন্ডপ রয়েছে। এই মন্ডপ গুলোতে নিকটবর্তী বিওপি টহলকারী দল নিয়মিত নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়াও পূজা চলাকালীন সময়ে সীমান্ত সুরক্ষায় বাড়তি নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে শারদীয় দূর্গা পূজা -২০২৫ এ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জ মিত্র চাকমা। তিনি বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ১৯ টি পূজা মন্ডপে প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন করে কর্মকর্তাকে নির্দিষ্ট মন্ডপে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্হাপন করা হয়েছে এবং তা নিয়ন্ত্রণ থাকবে কন্ট্রোল রুমে। পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর সার্বিক বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করা হবে। এ জন্য ষষ্ঠী পূজার আনুষ্ঠানিকতা থেকে শুরু করে বিজয়াদশমী পর্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পূজার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে তিনি জৈন্তাপুর উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি, সুধীজন গুনীজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।