জামালগঞ্জে তরুণ কৃষকের স্বপ্ন বোনা সাফল্যের গল্প
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৯ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের চাঁনপুর গ্রামে একজন তরুণ কৃষক কামাল হোসেন প্রতিদিন ভোরে উঠেন, স্বপ্ন বুনে, হাতে খড়ি নিয়ে। এক সময় তার জমিতে শুধু ধান আর বাদাম থাকত। কিন্তু এবার সেই জমি নতুন রূপে ফুটেছে—লতিরাজ কচুর সবুজ লতা দিয়ে।
যশোর থেকে বারি-১ জাতের ৩০ হাজার চারা নিয়ে এসে, কামাল মাত্র ৬ বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছিলেন। দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যেই সবুজ লতা ধরা দিয়েছে। আজ তিনি সপ্তাহে ১২-১৫ মণ লতা বিক্রি করছেন, প্রতিকেজি ৩৫-৪০ টাকায়, আর সেই সাথে তার চোখে জ্বলে উঠেছে সাফল্যের নতুন আলোর রেখা।
“আগে শুধু ধান ও বাদাম চাষ করতাম,” বললেন কামাল, “কিন্তু বন্ধু আমাকে লতিরাজ কচু চাষ করার পরামর্শ দিল। শুরুতে ভয় লাগছিল, কিন্তু এখন দেখছি, শ্রম এবং স্বপ্ন কখনো বৃথা যায় না।” প্রায় ৮.৫ লাখ টাকা খরচ করে তিনি এখন আশা করছেন, বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই ২০-২৫ লাখ টাকার লতা বিক্রি করতে পারবেন।
কেবল কামালের পরিবার নয়, গ্রামের কৃষকরা তার ক্ষেত ঘিরে ভিড় করছেন। ধান চাষি আব্দুস সালাম বললেন, “ফলন দেখে আমি মুগ্ধ। আগামী মৌসুমে আমিও লতিরাজ কচু চাষ করব।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার সাহা জানান, কচু একটি লাভজনক ফসল। লতিরাজ কচু শুধু অর্থ নয়, পুষ্টিতেও সমৃদ্ধ—গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য উপকারী। এবার উপজেলার ১০ হেক্টর জমিতে কন্দাল ফসল চাষ শুরু হবে, আর কামালের ক্ষেত হয়ে উঠেছে সেই পথপ্রদর্শক।
কামালের ছোট্ট জমি আজ শুধু সবুজ লতার মাঠ নয়, এটি স্বপ্ন, আশা এবং পরিশ্রমের গল্প বলছে—যেখানে একজন তরুণ কৃষক দেখালেন, সাহস আর শ্রম দিয়ে নিজের জীবনে কীভাবে জোয়ার আনতে হয়।





