জ্বালানি নীতিতে ‘বিজলী কৃষি’ অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সুনামগঞ্জে সমাবেশ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৫০ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় বিজলী কৃষি (Agri-Voltaics) বা কৃষি জমিতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন নীতি অন্তর্ভুক্ত করার জোরালো দাবিতে সুনামগঞ্জের চিনাউড়ার আনারস বাগানে এক বিশাল কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে কৃষক, তরুণ এবং পরিবেশ কর্মীরা অংশগ্রহণ করে দাবিটি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) হাওর এরিয়া আপলিফমেন্ট সোসাইটি (হাউস) এর উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তারা উল্লেখ করেন, দেশের অধিকাংশ ভূমি কৃষিজমি হওয়ায় বৃহদাকৃতির সোলার প্ল্যান্ট স্থাপন কঠিন ও বিতর্কিত। এর বিপরীতে, কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি ছোট ছোট সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা অতি সম্ভাবনাময় এবং টেকসই সমাধান হতে পারে। এই প্রযুক্তিকে বিজলী কৃষি বা অ্যাগ্রিভোলটাইকস বলা হয়।
সমাবেশে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা জোর দিয়ে বলেন যে অ্যাগ্রিভোলটাইকস প্রযুক্তি একই জমিতে কৃষি উৎপাদন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করে জমির দ্বৈত ব্যবহার সম্ভব করে তোলে।
হাউস নির্বাহী পরিচালক সালেহিন চৌধুরী শুভ বলেন,”বিজলী কৃষি নীতি অন্তর্ভুক্ত হলে কৃষকরা ফসলের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করবে। এটি পরিবেশবান্ধব এবং দেশের শক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,”
বক্তারা আরও জানান, সৌর প্যানেলের নিচে সৃষ্ট ছায়া ও আর্দ্রতা তাপপ্রবাহ থেকে ফসলকে রক্ষা করে এবং পানির অপচয় কমায়, যা অনেক ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক।
হাউস এর নির্বাহী পরিচালক সালেহিন চৌধুরী শুভ’র সঞ্চালনায় এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হাসান আতাহের, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একে কুদরত পাশা, বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কর্ণবাবু দাস,
সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি যে মূল দাবিগুলো তুলে ধরা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালায় বিজলী কৃষি (Agri-Voltaics) বা কৃষি জমিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করা। দেশের Integrated Energy and Power Master Plan (IEPMP)-এ অ্যাগ্রিভোলটাইকসকে অন্তর্ভুক্ত করা।নেট মিটারিং নীতিতে এই প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে গ্রামীণ কৃষকরা উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা এবং কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির স্বার্থে দ্রুত এই নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে উদ্যোগী হবে।





