সিলেটে ভূমিকম্প প্রস্তুতি জোরদারে সিসিকের জরুরি সভা
নিজস্ব প্রতিবেদন
প্রকাশিত হয়েছে : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ৮:৫৪ অপরাহ্ণ
সিলেট মহানগরীতে ভূমিকম্পের পূর্বপ্রস্তুতি এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, যে কোনো সময় দুর্যোগ নেমে আসতে পারে। তাই সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আগেই সব উদ্ধারযন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখতে হবে। কোন সংস্থার কাছে কী ধরনের যন্ত্রপাতি আছে—তার ডাটাবেজ তৈরি করা জরুরি। দুর্যোগ দেখা দিলেই যেন প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম দ্রুত পাওয়া যায়, সে কারণে পুরোনো স্বেচ্ছাসেবকদের পুনরায় প্রশিক্ষণ এবং নতুন স্বেচ্ছাসেবক তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন তারা। সোমবার বিকেলে নগর ভবনের সভাকক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী। সভায় আরও বক্তব্য দেন সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউর রাফিন সরকার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, ভূমিকম্প ঠেকানোর উপায় নেই; তবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নগরবাসীকে সচেতন করার পাশাপাশি উদ্ধারকাজে সম্পৃক্ত সব সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রস্তুত রাখা অত্যন্ত জরুরি।
সভাপতির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত সব ভবন ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন করে এসেসমেন্ট করে আরও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থাকলে তা উচ্চ পর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে ভাঙা হবে। জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় নতুন যন্ত্রপাতি কেনার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, ভূমিকম্পের সময় মানুষ যাতে নিরাপদ স্থানে যেতে পারে, সেজন্য বড় বড় খালি জায়গাকে প্রস্তুত রাখতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, গত একযুগে সিসিক একটিও দুর্বল বিল্ডিং অনুমোদন দেয়নি। বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করলে ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউর রাফিন সরকার বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়াতে সব দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে। বিদ্যমান যন্ত্রপাতিকে প্রস্তুত রাখা এবং নতুন স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করতে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালানো হবে।
জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, দুর্যোগের সময় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বা স্বেচ্ছাসেবী হাতে পাওয়া যায় না। তাই এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। পুরোনো স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নতুন স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করতে হবে। যন্ত্রপাতির ডাটাবেজ তৈরি জরুরি, যাতে যথাসময়ে কাজে লাগানো যায়।
সভায় সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, জালালাবাদ গ্যাস, আনসার-ভিডিপি, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, ইসলামিক রিলিফ, বিএনসিসি, স্কাউট, গার্লস গাইডসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।





