কর্মসূচি ছাড়াই পার হলো বিয়ানীবাজার মুক্ত দিবস
বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:৪০ অপরাহ্ণ
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে শত্রুমুক্ত হয়েছিল সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলা। তবে ঐতিহাসিক এই দিনটি এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই নীরবে নিভৃতে পার হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল কিংবা কোনো সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি পালন করা হয়নি।
ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শেষে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বিয়ানীবাজার হানাদারমুক্ত হয়। উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের তাজপুরে পাক সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধের পর পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। ৬ ডিসেম্বর বিয়ানীবাজার মুক্ত হলেও পরদিন ৭ ডিসেম্বর এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আনন্দ মিছিল করা হয়। যে কারণে স্থানীয়দের কেউ কেউ ৭ ডিসেম্বরকেও শত্রুমুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন।
মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় ইতিহাস থেকে জানা যায়, বিয়ানীবাজারে মোট ১২৪ জন শহীদ হন। যুদ্ধের সময় পাক সেনারা উপজেলার কাঁঠালতলা বধ্যভূমি, রাধা টিলা ও সারপার টর্চার সেলসহ বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়দের ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলায় ৬টি গণকবর আবিষ্কার করেন।
বর্বরোচিত সেই দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির জানান, বিয়ানীবাজারের কাঁঠালতলায় ৬০ জনের বেশি এবং রাধা টিলায় (বর্তমান স্মৃতিসৌধ) প্রায় ৩০ জনকে পাক সেনারা গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া সারপার টর্চার সেলে ৭ জনকে হত্যার পর সীমান্তবর্তী নওয়াগ্রাম গণকবরে পুঁতে ফেলা হয়।
তিনি আরও জানান, দেশের একমাত্র প্রবাসী বাউল কমর উদ্দিনকেও কাঁঠালতলায় নির্মমভাবে হত্যা করে পাকবাহিনী। এছাড়া রাধা টিলায় সুপাতলার ঘোষ পরিবারের ১২ সদস্যকে একই সঙ্গে হত্যা করা হয়েছিল।
এত বড় আত্মত্যাগ ও গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের সাক্ষী এই দিনটি এবার অবহেলায় ও নীরবে অতিবাহিত হওয়ায় স্থানীয় সচেতন মহলে হতাশা দেখা দিয়েছে।





