দুর্নীতির অভিযোগে ছাতকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মজিদ বদলি
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭:৪৫ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জের ছাতকে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদ আচরণ ও বিভিন্ন অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (বিউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মজিদকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। তাকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় পাঠানো হয়েছে।
গত ২৩ নভেম্বর বদলির আদেশ জারি হলেও নানা কৌশলে তিনি ছাতকে টিকে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করে ছাতক ত্যাগ করেন। তার বিদায়ে এলাকাজুড়ে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাতকে যোগদানের পর (৩০ এপ্রিল ২০২২) থেকেই আবদুল মজিদ ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে ঘুষ, মামলা বাণিজ্য, ট্রান্সফর্মার–মিটার পরিবর্তন, নতুন সংযোগে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগ ওঠে।
তাদের ভাষ্য, দালালচক্র ও অস্থায়ী কর্মচারীদের নিয়ে তিনি একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি, দিনমজুর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মী—অনেকেই এই সিন্ডিকেটের হয়রানির শিকার হয়েছেন।
জানা যায়, গত ৩ নভেম্বর তাকে প্রথমে বান্দরবানে বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি সেখানে যোগ না দিয়ে ছাতকেই অবস্থান চালিয়ে যান। এ সময় বদলি ঠেকানোর পাশাপাশি আগের মতোই অনিয়ম অব্যাহত রাখেন বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে এসব অনিয়মের খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষ। পরে ২৩ নভেম্বর নতুন করে তাকে ভালুকায় বদলি করা হয়।
সম্প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানতে গেলে ছাতকের কয়েকজন সাংবাদিককে তার কার্যালয়ের বাইরে প্রায় ৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, কার্যালয়ের ভেতরে তখন মামলা ও অভিযোগপত্র নিয়ে গোপন আলাপ চলছিল।
পরে সাক্ষাতের সুযোগ মিললেও তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদ আচরণ করেন এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তাদের ‘ব্ল্যাকমেইল’ করার চেষ্টা করেন—যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দেয়। এমনকি ভুল তথ্য দিয়ে পুলিশ ডেকে এনে পরিস্থিতি জটিল করার অভিযোগও ওঠে। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, তাঁর মেয়াদকালে বিদ্যুৎ লাইনে রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতির কারণে বিভিন্ন স্থানে ঝুলন্ত তারে দুর্ঘটনা ঘটলেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি।
অনেকের মতে—প্রকৌশলীর বদলিতে স্বস্তি মিললেও তাঁর সহযোগী সিন্ডিকেট সদস্যরা থাকলে দুর্ভোগ পুরোপুরি কমবে না।




