জলমহাল সুরক্ষা ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে শ্রীমঙ্গলে জরুরি সভা
নিউজ ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২:০৫ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জলমহাল ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকাল ৪ টায় পৌরসভার অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মহিবুল্লাহ আকন, শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম, কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতলিব, সিন্দুরখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত রবিন, মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিছলু আহমেদ, সাতগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান দেবাশীষ দেব রাখু, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ সালাউদ্দিন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি মো. আশরাফুল ইসলাম কামরুল, মৌলভীবাজার জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় রশিদ তম্ময়, সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আহ্বায়ক মোজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ভূনবীর ইউনিয়নে আপাতত সরকারি ২০ টি জলমহালের সীমানা নির্ধারণের আগ পর্যন্ত পলো বাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। এসময় উপস্থিত সবাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন।
উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়, সুষ্ঠুভাবে ইজারাবিহীন জায়গায় পলো উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে শিগগির ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, মৎস্যজীবীসহ এলাকার মুরব্বিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে এবং নির্ধারিত তারিখ ও স্থানে পলো উৎসব হবে। এর আগ পর্যন্ত সকলকে পলো উৎসবের নামে অন্যের ইজারাকৃত বিলে মাছধররা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এছাড়া আইন বহির্ভূত উপায়ে মৎস আহরণ বন্ধে আগামীকাল মৎসজীবী সকল সমিতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ একটি সভা আয়োজন করা হয়েছে বলে তিনি সবাইকে অবগত করেন। সভায় ইউএনও উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ ইজারা দেয়া বিল চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও সকলের সহযোগিতার অনুরোধ করেন।
সৃষ্ট ঘটনা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা প্রসঙ্গে ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। জড়িত নয় এমন কাউকে হয়রানি করা হবে না।
সভায় স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ বছর থেকে মৎসজীবিদের নামে বিল ইজারা নিয়ে ইজারাকৃত জলমহালের বাহিরে এক শ্রেণির সুবিধাভোগীরা শত শত একর জায়গা দখল করে নিষিদ্ধ জাল ফেলে মাছ শিকারের কারণে মূলত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ সে দিনের ঘটনা। এই অবৈধ দখলের কারণে লোকজন হাওরে মহিষ চরাতে পারেন না, পলো উৎসবে বাঁধা প্রাপ্ত হন বলে জানান তারা।
মৎসজীবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ভুনবীর ইউনিয়নে ৭টি মৎস্য সমিতি আছে। সকল সমিতির ব্যাপারে প্রশাসন কর্তৃক আরো তদারকির প্রতি তিনি গুরুত্বারুপ করেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সকল সদস্য, ভূনবীর ইউনিয়নের সকল মেম্বারসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর ও ৩ ডিসেম্বর ভূনবীর ইউনিয়নে ইজারাকৃত জলমহাল ও আশপাশের এলাকায় পলো উৎসবের নামে মাছ লুটের ঘটনা ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ইজাদার সুজিত সরকার বাদি হয়ে স্থানীয় যুবদল নেতা আহাদ মিয়াসহ ১৫জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২০০জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।




