সিলেটে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ
নিজস্ব প্রতিবেদন
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩২ অপরাহ্ণ
সিলেটে গান আর আলোচনায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শরীরচর্চা বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্বান্তে রবিবার (৯ অক্টোবর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সিলেট জেলা সাবেক আহবায়ক জান্নাত আরা খান পান্নার সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) দেবব্রত রায় দিপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হিমাদ্রী শেখর রায়।
অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে প্রধান অতিথি বলেন, সংগীত,নাটক, নৃত্যকলা,চিত্রকলা বা খেলাধুলা এসব শুধু বিনোদনই নয়, এগুলো শিশুর মানসিক ভারসাম্য,সহনশীলতা ও সামাজিক রোধ গড়ে তোলে। ইউনেস্কোসহ বিশ্বের শিক্ষা সংস্থাগুলো বারবার বলছে, ’আর্টস আর নট লাক্সারি,দে আর এ নেসেসসিটি ফর হলিস্টিক এডুকেশন’। অথচ আমাদের দেশে সিদ্বান্ত গ্রহণ করেও সঙ্গীত ও শরীর চর্চা শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করা হয়। বিষয়টি খুবই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার। তিনি বলেন,শারীরিক শিক্ষা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে এবং সংগীত মানুষের মানবিক গুনাবলী বিকাশের অন্যতম এক মাধ্যম।
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দেবব্রত রায় দিপন বলেন, একজন মানুষ যখন সাংস্কৃতি পরিমন্ডলে বেড়ে উঠে,তখন তাকে বাঁচা বলে। সেই পরিবেশের অনুিপস্থিতিতে যাপন করার মানে জীবন্মৃত থাকা। একটি নির্দিষ্ট গোষ্টী ৫৪ বছরের প্রতিশোধ নিতে একের পর এক আমাদের সংস্কৃতির উপর আঘাত দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হলো—মানুষের মানবিক চিন্তার বিপরীতে এক ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার আস্ফালন, যা আমাদের সমাজের সহাবস্থান, সহনশীলতা এবং ভালোবাসার সংস্কৃতিকে গলা টিপে হত্যা করছে। মানবতার জায়গায় বসানো হচ্ছে বিভেদের রাজনীতি, যুক্তির জায়গায় অন্ধ আনুগত্য, আর সহমর্মিতার জায়গায় ঘৃণার বিষবাষ্প। তিনি বলেন, ইতিহাস সাক্ষী—এই দেশে কখনও অন্ধকার স্থায়ী হয়নি। প্রতিবারই মানুষ তার অন্তরের আলো দিয়ে নতুন দিনের দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আজ সেই আলোর প্রদীপ পুনরায় জ্বালানোর সময় এসেছে।
সভাপতির বক্তব্যে জান্নাত আরা পান্না বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যেখানে একসময় ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষা প্রদান নিষিদ্ধ ছিলো সেসব দেশেও এখন সংগীত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।এমন বাস্তবতায় গানের দেশ খ্যাত বাংলাদেশে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত জাতির সাথে প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি অবিলম্বে সরকারকে এই সিদ্বান্ত প্রত্যাহার করে যথারীতি শিক্ষক নিয়োগ বাস্তবায়ন করার প্রতি জোর দাবি জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন,সাংবাদিক রজত চক্রবর্তী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সিলেট জেলার সাবেক সদস্য সচিব সন্দিপন শুভ, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল সিলেট জেলা সভাপতি তানজিনা বেগম, সাংবাদিক তাহের আহমদ,কবি মেঘদাদ চৌধুরী, কবি রিফাত রোদ্দুর, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা অভ্রভেদী সন্দিপ, অথৈসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ সমাবেশে দেশাত্মবোধক জাগরনের গান পরিবেশন করেন বিমান তালুকদার ও তাঁর দল।





