শোক সাগরে সিলেট : না ফেরার দেশে দিপংকর দ্বীপ
নিজস্ব প্রতিবেদন
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ৩:১৭ অপরাহ্ণ
সিলেটের প্রিয় মুখ, হাসি-কান্না ও পারিবারিক ভালোবাসার গল্পে ভরা কনটেন্টের স্রষ্টা দিপংকর দাস দ্বীপ আর নেই। পরিবারকে ঘিরে নির্মিত তাঁর প্রতিটি ভিডিও ছিল হৃদয়ছোঁয়া—যেখানে ফুটে উঠতো ভালোবাসা, মায়া, খুনসুটি আর জীবনের অদেখা রঙ। সেই দ্বীপ আজ আর কোনো ভিডিও বানাবেন না, আর হাসাবেন না তাঁর অসংখ্য দর্শককে।
মাত্র কয়েক মাস আগে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করবেন, নতুন কিছু শিখবেন, আবার আরও প্রাণবন্ত কনটেন্ট দিয়ে দর্শকদের আনন্দ দেবেন। কিন্তু হঠাৎই সব স্বপ্ন থেমে গেল বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোরে, মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) গভীর রাতে হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন দ্বীপ। দ্রুত তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৫টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই তরুণ প্রতিভা।
সিলেট নগরীর গোপালটিলা এলাকার বাসিন্দা দ্বীপ ছিলেন বাবা-মা ও এক ছোট ভাইয়ের আদরের সন্তান। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মন্ডলকাপন পটিজুড়ি গ্রামের সন্তান তিনি। মালয়েশিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে—স্বপ্ন ছিল নিজের পথ নিজেই গড়ে তোলার।
হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর সহপাঠীরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ইতোমধ্যে তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতিও চলছে।
দ্বীপের নির্মিত ভিডিওগুলোতে হাসির আড়ালে ছিল এক গভীর বাস্তবতা, ছিল জীবনের সূক্ষ্ম অনুভব। তাঁর পারিবারিক কনটেন্ট মানুষকে শুধু বিনোদন দেয়নি, দিয়েছে ভালোবাসা ও একাত্মতার বার্তা। ফেসবুক ও ইউটিউবে তাঁর বিশাল ভক্তগোষ্ঠী আজ শোকে নিস্তব্ধ।
তাঁর চলে যাওয়া যেন এক অনন্ত শূন্যতা সৃষ্টি করেছে সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে।
মানুষ বলছে—“দ্বীপ শুধু কনটেন্ট ক্রিয়েটর ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক হৃদয়ের মানুষ, যিনি আমাদের হাসির আড়ালে লুকানো ভালোবাসা শেখাতেন।”
তাঁর হাসি, তাঁর কণ্ঠ, তাঁর মমতাময় গল্পগুলো এখন স্মৃতির অ্যালবামে বন্দী। চলে গিয়েও তিনি রয়ে যাবেন হাজারো মানুষের ভালোবাসায়, দর্শকের হৃদয়ে আলোকিত এক চিরন্তন দ্বীপ হয়ে।





