শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন



Repoter Image

আই নিউজ ডেস্ক ::

প্রকাশ ২৪/০৬/২০২২ ০৪:১৬:৫৪

গোয়াইনঘাটের ফেনাইকোনা গ্রামের ৬ বছরের শিশু দেলোয়ার আহমদ সাহেলকে নির্মমভাবে গলা কেটে এবং চোখ উপড়ে খুনের ঘটনায় আপন চাচাতো ভাই আবরারুল হক আবাবুলকে (২২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন সিলেটের আদালত।

বৃহস্পতিবার সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মশিউর রহমান এই রায় দেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আবাবুল গোয়াইনঘাটের ফেনাইকোনা (ফুরিগ্রাম) গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে।

মামলাসূত্রে জানা গেছে, আবরারুল হক আবাবুল ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে তার প্রেমিকাকে নিয়ে জাফলং এলাকায় ঘুরতে যান। এ সময় স্থানীয় লোকজন আবাবুল ও তার প্রেমিকাকে অপ্রীতিকর অবস্থায় আটক করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেন। উভয় পরিবারের লোকজন জাফলং গিয়ে আবাবুলের সাথে ওই তরুণীর বিয়ে দেওয়ার শর্তে তাদের ছাড়িয়ে আনেন। কথামতো পরদিনই সিলেট নগরীতে বিয়ে পড়ানো হয় আবাবুল ও তার প্রেমিকার। বিয়ের পর বাড়ি ফিরে আসেন আবাবুল। কিন্তু ওই ঘটনা নিয়ে আবাবুলের প্রবাসি চাচা ছোয়াব আলী কালা এবং চাচী রুমানা বেগম প্রতিনিয়ত আবাবুল ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ধরণের কথা শোনাতেন। এতে রাগান্বিত হয়ে আবাবুলের পরিবারের লোকজন তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেন এবং একপর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আবাবুল। তার বাড়িছাড়ার কারণ হিসেবে চাচা এবং চাচীকেই দোষারোপ করেন।

এর কিছুদিন পর ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে চাচাতো ভাই দেলোয়ার আহমদ সাহেলকে ডেকে বাড়ির পাশে পেয়ে ডেকে নিয়ে যাদ দক্ষিণ পাশের জঙ্গলে। সাহেলের বাবা কালা ও মা রুমানার উপর ক্ষেভ থেকে শিশু সাহেলকে নির্মমভাবে গলা কেটে এবং বাম চোখ উপড়ে ফেলে খুন করেন আবাবুল। ওই দিন বিকেলে শিশুটির লাশ উপুড় করা অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন।

এ ঘটনায় নিহত সাহেলের বাবা ছোয়াব আলী কালা বাদি হয়ে ৭ ফেব্রুয়ারি ১১ জনকে আসামি করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা (নম্বর-৯) দায়ের করেন। তবে ওই ১১ জনের মধ্যে ছিলো না খুনী আবাবুলের নাম। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার এসআই মো. আতিক উজ জামান জুনেল তদন্তকালে আবাবুলের গতিবিধি সন্দেহ হলে তাকে আটক করেন।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আবাবুল স্বীকার করেন তিনিই হত্যা করেছেন চাচাতো ভাই সাহেলকে। তার জবানবন্দি মোতাবেক উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা। আসামি আবরারুল হক আবাবুল এরপর থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারেই ছিলেন। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) জমা দেয় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। ওই অভিযোগপত্রে একামাত্র আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয় ঘাতক আবাবুলের নাম। ঘটনায় সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় এজাহারভুক্ত আসামিদের অব্যাহতি প্রদান করেন আদালত। প্রায় আড়াই বছর ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ ও প্রমাণাদি পর্যালোচনার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক মো. মশিউর রহমান।

এই রায়ে সন্তুষ্ট নিহত শিশু দেলোয়ার আহমদ সাহেলের পরিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী জেলা ও দায়রা জজ আদালত সিলেটের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন জানান, শিশু সাহেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামির ফাঁসি হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার বয়স বিবেচনা করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন বিজ্ঞ বিচারক। মামলার সঠিক তদন্তের জন্য সিলেট জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন।

সিলেট আই নিউজ / আইনিউজ/জেইউ

মাই ওয়েব বিট

আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর মনিটরিং করার জন্য এটা ব্যবহার করতে পারেন, এটি গুগল এনালাইটিক এর মত কাজ করে।

ফেসবুক পেইজ