

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :>>
প্রকাশ ২০২২-০৭-১৫ ১৫:৩৩:০৬

সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পলিন বখতের নের্তৃত্বে সুনামগঞ্জে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন অভিযোগ এনে শুক্রবার (১৫ জুলাই) উত্তর আরফিন নগরের মৃত মকসদ আলীর ছেলে মশাহিদ রহমান কুটি মিয়া সুনামগঞ্জ সদর থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৭। মামলার এজহারে তিনি ঘটনার তারিখ উল্লেখ করেন বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) রাত আনুমানিক ৯ টা। ওইদিন শহরের উকিলপাড়াস্থ উত্তরা কফি হাউস সংলগ্নস্থানে হামলার ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন সুনামগঞ্জে জেলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ও পেশাদার খেলায়ার মশাহিদ রহমান কুটি মিয়া। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত একজনের চোখ চিরতরে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকগণ।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ধারালো চাকুসহ একজনকে আটক করেছে। আটক আসামীর নাম রাজ (২৭)। তিনি মুক্তারপাড়ার সালাম মিয়ার ছেলে। মামলার অন্য আসামীরা হলেন, আরফিন নগরের মৃত হোসেন বখতের ছেলে নোমান বখত পলিন (৫২, কালীবাড়ি এলাকার সুদীপ দের ছেলে বিশাল দে, কালিবাড়ির মাহফুজুর রহমানের ছেলে মো. তানজিলুর রহমান ও আরফিন নগরের ইয়াকুব বখত বহলুলের ছেলে ইফতি বখত।
মামলার এজহারে মশাহিদ রহমান কুটি মিয়া উল্লেখ করেন উল্লেখিত আসামীরা সদলবলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বৃহস্পতিবার উকিলপাড়াস্থ উত্তরা কফি হাউসের সামনে আসে। সেখানে নাস্তারত অবস্থায় মশাহিদ রহমান কুটি মিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আরফিন নগরের মৃত হোসেন বখতের ছেলে ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখতের ভাই পলিন বখত। এ সময় শহরের ষোলোঘরের বশির আহমদের ছেলে রফিক চৌধুরী এবং অক্ষয়নগরের আবদুল কাদিরের ছেলে আশিক পলিনকে বারণ করার চেষ্টা করলে পলিন বখত তাদেরকেও প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করে। এরপর আসামীগণ কফি হাউসের বাহিরে থেকে মারধোর করার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর কুটি মিয়া কফি হাউস থেকে বের হয়ে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী জুয়েল আমিনের বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেসময় পলিন বখতের নির্দেশ অনুযায়ী শহরের কালিবাড়ি এলাকার মাহফুজুর রহমানের ছেলে তানজিলুর রহমান হাতে থাকা চাকু দিয়ে কুটি মিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় মামলার ১ নং আসামী মুক্তার পাড়ার আবদুস সালামের ছেলে রাজ (২৭) তার হাতের চাকু নিয়ে কুটি মিয়াকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য আক্রমণ করতে থাকে। কুটি মিয়াকে রক্ষার জন্য মল্লিকপুরের সাদ্দাম মিয়ার ছেলে ইব্রাহিম আলী এগিয়ে আসলে পলিন ও রাজ তাকেও কোপাতে থাকে।
এ সময় চাকুর আঘাতে ইব্রাহিমের চোখ দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্তপাত হতে থাকে। আক্রমণ থামাতে সোমপাড়ার নুরুল আহমদের ছেলে শামীম এগিয়ে আসলে তিনিও শিকার হন আক্রমণের। শামীমকেও এ সময় সকল আসামীরা সদলবলে আক্রমণ করে মারাত্বক আহত করে। এ সময় সাথে থাকা পলিন বখতের ভাতিজা ইফতি বখত সকলের আহত অবস্থার সুযোগে শামীম আহমদকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপাতে থাকে। সকলের সদলবলে আক্রমণ এবং চিৎকার শোনে ঘটনাস্থলে অনেক লোক জড়ো হলে আসামীগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মুক্তারপাড়ার সালামের ছেলে রাজকে চাকুজব্দসহ আটক করে। আহত অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদরহাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সবাইকে দ্রুত সিলেট ওসমানী হাসপাতালে রেফার করেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সুনামগঞ্জ সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় একজনকে চাকুসহ আটক করা হয়েছে। বাকি আসামীদের ব্যাপারেও পুলিশ তৎপর রয়েছে।
সিলেট আই নিউজ / এনসি


ফেসবুক মন্তব্য