আই নিউজ ডেস্ক ::
প্রকাশ ১২/১২/২০২৪ ০৯:৫৯:৩২
শীতের আগমনে প্রকৃতির স্বরূপ পরিবর্তন মুগ্ধ করে সবাইকে। শীতের আগমনে পাহাড়ের জীবপ্রকৃতির মাঝেও এসেছে পরিবর্তন। গত এক সপ্তাহে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শীতের আমেজ উপলব্ধি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গড়ে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মন্ডল।
শীতকে উপলক্ষ্য করে বছরের এই সময়টাতে পর্যটন নগরী বান্দরবানে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ে। যান্ত্রিক কর্মব্যস্ত শহরের কোলাহল ছেড়ে খানিকটা প্রশান্তির আশায় পরিবার পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে অনেকেই ছুটে আসেন পাহাড় কন্যা বান্দরবানে।
কুয়াশা ঘেরা উঁচু উঁচু পাহাড়, ঝর্ণা, দর্শনীয় পর্যটন স্পষ্ট, নানা ভাষাভাষী ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের জনসাধারণের বৈচিত্র্যময় জীবনযাত্রা মুগ্ধ করে আগত পর্যটকদের। তবে নানা কারণে এ বছর বাড়ছে না পর্যটকদের সংখ্যা।
বিগত কয়েক বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অপতৎপরতা, সন্ত্রাস বিরোধী যৌথ অভিযানের কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে জেলায় পর্যটক ভ্রমণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ ছিল বছর জুড়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়। যার প্রভাব পড়েছে বান্দরবান পর্যটন শিল্পে।
দীর্ঘদিন পর গত নভেম্বর মাসে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি এই তিনটি উপজেলার পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞাসহ পর্যটক ভ্রমণের বিষয়ে বিধিনিষেধ বহাল রেখে প্রাথমিকভাবে জেলা সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে বান্দরবানে ঘুরতে আসা অমিত রায় দম্পতি বলেন, বান্দরবানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক সুন্দর। এটা বাংলাদেশের ভূস্বর্গ। জেলা শহর থেকে দূরের উপজেলাগুলোতে যেতে পারলে ভালো লাগতো। ভ্রমণ বিধিনিষেধে পর্যটকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
ঘুরতে আসা পর্যটক রিফাত বলেন, ২০১৫ সালে একবার বান্দরবান এসেছিলাম। আবার প্রকৃতির প্রেমে ছুটে আসলাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মুগ্ধতা আবার উপভোগ করতে। সরকারের প্রতি অনুরোধ যত দ্রুত সম্ভব অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধান করা যায় তত ভালো।
হোটেল গ্রিন পিক রিসোর্টের ম্যানেজার নাহিদ বলেন, এখন পর্যটন মৌসুম। এই মৌসুমে যে পরিমাণ পর্যটক থাকার কথা, সে রকম পর্যটক উপস্থিতি নেই। বিশেষ করে জেলার রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি উপজেলার দর্শনীয় পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকরা যেতে পারছে না যার কারণে এই মৌসুমে জেলায় পর্যটক উপস্থিতি আশানুরূপ হয়নি। যদি সব স্পটগুলো খুলে দেওয়া যায় তাহলে সামনে পর্যটক আসবে।
তিন উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণের বিধিনিষেধের কারণে জেলায় আগত পর্যটকদের মনে কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই।
জেলা আবাসিক হোটেল রিসোর্ট ওয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্য মতে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমণ না থাকায় এই সেক্টরে প্রতিমাসে লোকসান হচ্ছে হাজার কোটি টাকা।সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে পাহাড়ে সম্প্রীতি ফিরে আসবে, আবার প্রাণচঞ্চল্যতা ফিরবে পর্যটনশিল্পে এমনটাই আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট আই নিউজ / জেইউ
ফেসবুক পেইজ
ফেসবুক মন্তব্য