শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:১১ অপরাহ্ন



Repoter Image

আই নিউজ ডেস্ক ::

প্রকাশ ১৫/০৬/২০২৫ ১২:৩৭:২২
Sylhet i News, সিলেটি নিউজ, Sylhet News Bangla
ছবি: সংগৃহীত


আবাসিক গ্যাস সংযোগ ও পাথর কোয়ারি নিয়ে দুই উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে সিলেটে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। পাথর কোয়ারি খুলে না দেওয়ার ঘোষণায় দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেছে জনতা। আর ‘কেয়ামত পর্যন্ত আবাসিক গ্যাস সংযোগ’ দেওয়া সম্ভব নয়- জ্বালানি উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ সিলেটবাসী। সিলেট থেকে উত্তোলিত গ্যাস দিয়ে এ অঞ্চলের চাহিদা পূরণের পর অন্যত্র সরবরাহের দাবি জানাচ্ছেন তারা।

সিলেট থেকে উত্তোলিত গ্যাস দিয়ে পূরণ হয় দেশের চাহিদার সিংহভাগ। কিন্তু গেল এক দশকের বেশি সময় ধরে সিলেটে বন্ধ রয়েছে আবাসিক গ্যাস সংযোগ। এর প্রতিবাদে সিলেটবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। সিলেটের চাহিদা মেটানোর পর দেশের অন্যত্র গ্যাস সরবরাহের দাবিতে সিলেটে ও প্রবাসে সভা, সমাবেশ, মতবিনিময়, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

এ অবস্থায় গত শুক্রবার দুপুরে সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শন শেষে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আবাসিক গ্যাস সংযোগ চালু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কেয়ামত পর্যন্ত বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকবে। শিল্পকারখানা যেখানে গ্যাস পাচ্ছে না, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস মিলছে না। সেখানে বাসাবাড়িতে গ্যাস দেওয়া অপচয়। ’ তিনি সিলেটসহ দেশের যেসব অঞ্চল থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে সেসব অঞ্চলে ৮০০ টাকায় সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস দেন।

স্থায়ীভাবে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধে জ্বালানি উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। এ প্রসঙ্গে ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব শরীফ জামিল বলেন, সিলেট থেকে উত্তোলিত গ্যাসের মালিক সিলেটবাসী। তারা ঠিক করবে এ অঞ্চল থেকে উত্তোলিত গ্যাস কোন খাতে কোথায় ব্যবহৃত হবে। তাদের নিজেদের প্রয়োজন না মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ অনুচিত।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যেখান থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা হবে, সেই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ করাটাই হচ্ছে নিয়ম। উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি দেওয়ার আগে ভাবা উচিত ছিল তিনি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। তার বক্তব্যে সিলেটবাসী আঘাত পেয়েছে, অপমানিত বোধ করেছে। তার এমন বক্তব্য সিলেটবাসীকে ক্ষুব্ধ ও হতবাক করেছে।

এদিকে গতকাল সিলেটের জাফলং ইসিএ এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরিদর্শন শেষে দুই উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানান, সিলেটে আর কোনো পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া হবে না। তাদের এ বক্তব্যে তাৎক্ষণিক ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেন। পাথর কোয়ারি খুলে না দেওয়ার ঘোষণায় পরিবেশবাদীরা স্বস্তি প্রকাশ করলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদরা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কীম বলেন, উপদেষ্টা পাথর কোয়ারি বন্ধের যে কথা বলছেন সেটা ‘কেতাবের গরু’র মতো। কোয়ারি বন্ধ দাবি করলেও বাস্তবে চলছে হরিলুট। জাফলং ও সাদাপাথর লুটের মহোৎসব চলছে। এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।



সিলেট আই নিউজ / একে


ফেসবুক পেইজ